সিনে ডেস্কঃ
তুমুল আলোচিত রেহানা মরিয়ম নূর সিনেমা মুক্তির পর অনেক দিন পর্যন্ত ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন সিনেমা হলে পাওয়া গেছে সিনেমাটির অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনকে। সিনেমা হলে তিনি নিজে দর্শকদের সঙ্গে সিনেমা দেখেছেন, কথা বলেছেন, জেনেছেন তাদের অনুভূতির কথা।
কেমন ছিল দর্শকদের অনুভূতি? সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি আজমেরী হক বাঁধন।
প্রশ্ন: রেহানা মরিয়ম নূর -এর দর্শকদের প্রতিক্রিয়া কেমন?
আজমেরী হক বাঁধন: আমার কাছে মনে হয়েছে, যারা আসলে মিডিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত নন- এই রকম মানুষের প্রতিক্রিয়া আমাকে অনেক বেশি কানেক্ট করতে পেরেছে। চট্টগ্রামে আমি যখন গিয়েছি, ওখানকার দর্শকদের প্রতিক্রিয়া অন্য রকম ছিল। ওখানে একটা মেয়ে আমাকে একটা চিঠি দিয়েছে। ও চিঠিতে কী লিখেছে সেটা বলতে মানা করেছে। কিন্তু ও যখন আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছিল, তখন আমি বুঝতে পারছিলাম ওর কত কষ্ট হচ্ছে এবং অনেক সাধারণ দর্শক পেয়েছি, যারা সরাসরি কানেক্ট করতে পেরেছেন রেহানাকে, ইমুকে; যে মেয়েটা ভিকটিম তার সঙ্গে।
মেয়েরা নানান ধরনের প্রতিবন্ধকতার শিকার হন, আমরা অধিকাংশ সময়েই এটা ডিনাই করি; সামাজিক প্রেক্ষাপটে আমরা ডিনাই করতে শিখে যাই এবং মনে হয় যেন ভালো মেয়েদের সঙ্গে তো এটা একেবারেই হয় না।
প্রশ্ন: কিন্তু কারা কানেক্ট করতে পারছেন না?
বাঁধন: আমি কাউকে পার্সোনালি অ্যাটাক করার জন্য বলছি না। আমার কাছে মনে হয়েছে অনেকে সিনেমা হলে গিয়েছেন শুধু সমালোচনা করার জন্য, সেই দলটা খুবই কম। তবে আমি অনেক গঠনমূলক সমালোচনা পেয়েছি, যেটা আমাকে একটা ভালো লাগা দিয়েছে। একটা সিনেমার কাজই এটা যে এটা নিয়ে আলোচনা হবে, সমালোচনা হবে, সেটা নিয়ে মানুষের মতপার্থক্য হবে। তারা বিভিন্নভাবে একটা সিনকে চিন্তা করতে পারবে। ওই জায়গাটা আমার কাছে মনে হয় রেহানা মরিয়ম নূর খুব সফলভাবে করতে পেরেছে।
প্রশ্ন: টিভি এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম খুললে এখন প্রায়ই আপনাকে দেখা যায়। টাকা ভালোই আয় হচ্ছে…
বাঁধন: (হাসি) হ্যাঁ, এটাই মনে হচ্ছে সবার। আমি জীবনে অনেক আনসার্টেইনিটির মধ্যে ছিলাম। এখনও মনে আছে, ২০১৪ সালে যখন আমার বাচ্চার বাবা আমাকে আর বাচ্চাকে রেখে চলে যায় আমার বাবার বাসায়, তখন আমার বাচ্চাকে সানবীমস স্কুলে ভর্তি করাতে হবে। ভর্তি করানোর সময় চেকে টাকার পরিমাণ লেখার পর আমার অ্যাকাউন্টে আর ৪-৫ হাজার টাকা ছিল।
ওই জায়গা থেকে অবশ্যই আমার আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে এবং সেটার জন্য আমি অবশ্যই গ্রেটফুল।
প্রশ্ন: নতুন কী সিনেমায় অভিনয় করতে যাচ্ছেন?
বাঁধন: যে সিনেমাটা করতে যাচ্ছি সেটাতে আমার চরিত্রটা আমার খুব পছন্দ হয়েছে। এটা খুব জরুরি, আমি যখন ভিশাল ভরদ্বাজের সঙ্গে কাজ করেছি, সেখানেও সবচেয়ে বেশি আনন্দের ছিল, যে চরিত্রটা করতে যাচ্ছি সেটা ভালো লাগছে কি না। সেই জায়গা থেকে সাদিকের (নতুন সিনেমার পরিচালক) গল্পটা মেইল প্রোটাগনিস্ট ঘরানার কিন্তু আমার যে চরিত্র সেটা আমাকে ভীষণভাবে প্রভাবিত করেছে।
প্রশ্ন: ভক্তরা আইটেম নাম্বারে দেখতে চাইলে কী করবেন?
বাঁধন: আমি যদি এই বয়সে এসে নাচ শিখতে পারি, আমি ডেফিনেটলি করতে চাই কিন্তু আমি আমার জীবনে কখনও নাচ-গান-কবিতা-অভিনয় কিছু শিখিনি। নাচ এবং গান কিন্তু অভিনয়ের মতো না। আমি যা না কিন্তু সেটা যদি এক্সপ্লোর করতে পারি, আমি সেটা করতে চাই। এখন আমি চ্যালেঞ্জ নিতে চাই।
প্রশ্ন: অনেক কাজ করছেন, আগামীর কতটা দেখতে পান?
বাঁধন: আমার জীবনটা আগামী ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত দেখতে পাচ্ছি। এর পরে আমার জীবনের আর কোনো প্ল্যান নেই। কী করব জানি না। আমি খুব বেশি দূর পর্যন্ত জীবনকে দেখতে চাই না। আমি বর্তমানটাকে এনজয় করতে চাই। আমরা শুধু শিখি ফিউচারের কথা চিন্তা করে বর্তমানকে নষ্ট করব, অতীতের কথা চিন্তা করে বর্তমানকে নষ্ট করব। এই শিক্ষা থেকে বের হওয়ার চেষ্টায় আমি আছি।
প্রশ্ন: ৬ জানুয়ারি শুরু হবে ৩৩তম পাম স্প্রিংস আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। সেখানে অংশগ্রহণ করবে রেহানা মরিয়ম নূর। যাচ্ছেন সেখানে?
বাঁধন: হ্যাঁ, ৩ জানুয়ারি আমি, নির্বাহী প্রযোজক এহসানুল হক বাবু উৎসবে যোগ দিতে যাচ্ছি। সেখানে আছেন আমাদের আরেক সহপ্রযোজক রাজিব মহাজন। তিনিও আমাদের সঙ্গে উৎসবে থাকবেন।
Leave a Reply