অনলাইন ডেস্কঃ
সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) সভাপতি এ কে আজাদ বলেছেন, সংবাদপত্র শিল্প এখন রুগ্ন হয়ে পড়েছে। এর অন্যতম কারণ কাগজের উচ্চমূল্য। এ ছাড়া বেতন-ভাতাসহ অন্য খরচও বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সংবাদপত্র শিল্পে সহযোগিতা দরকার।
মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) আয়োজিত দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় গণমাধ্যমের ভূমিকা, সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে নোয়াবের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ কে আজাদ বলেন, সংবাদপত্রের আয় বাড়েনি, বিজ্ঞাপন কমে গেছে। এখন বিজ্ঞাপনে ডিসকাউন্টও দিতে হচ্ছে অনেক। পত্রিকা বিক্রি ও বিজ্ঞাপন বাবদ অনেক টাকা অনাদায়ী থাকছে।
তিনি বলেন, করোনার সময় সরকার বিভিন্ন খাতে প্রণোদনা দিলেও সংবাদপত্র শিল্পে দেয়া হয়নি। প্রণোদনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের কাছে নোয়াবের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে। হকারদের জন্য সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার মেয়রদের কাছে জায়গা চাওয়া হয়েছে।
সরকারের নীতিসহায়তার বিষয়ে এ কে আজাদ বলেন, সদস্যদের পরামর্শ নিয়ে আমি বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরকে জানিয়েছি, যেন সংবাদপত্র শিল্পকে এ সহায়তার মধ্যে আনা হয়। একই বিষয়ে মুখ্য সচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে জানানো হয়েছে, তার পরও শিল্পটি প্রণোদনার আওতায় আসেনি।
এ সময় এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, যদিও নোয়াব আমাদের সদস্য, কিন্তু আমরা মনে করছি, আমাদের সঙ্গে তাদের একটা দূরত্ব আছে, যেটা আরো বেশি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কাটিয়ে ওঠা প্রয়োজন। আমরা দুই পক্ষই সিদ্ধান্ত নিয়েছি এখন থেকে মাঝে মাঝেই আলোচনায় বসব। সংবাদপত্রের জন্য আমরা একটি স্ট্যান্ডিং কমিটি করার পরিকল্পনা করছি। এফবিসিসিআই থেকে একজন ডিরেক্টর এবং নোয়াব থেকে একজন চেয়ারম্যান নিয়ে এ কমিটি গঠন করা হবে। ফলে নোয়াব তাদের সমস্যা নিয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলতে পারবে, প্রয়োজনে আমরা সেমিনারের আয়োজন করেও নোয়াবের সমস্যা সমাধানে কাজ করব।
রাজস্ব আদায় প্রসঙ্গে এ কে আজাদ বলেন, সব শিল্পে কর হার ঠিক করা আছে। যেমন- তৈরি পোশাক খাতের জন্য নির্দিষ্ট করহার রয়েছে। একইভাবে সব খাতের জন্য একটি কর কাঠামো দেয়া আছে। কিন্তু আমাদের এ রুগ্ণ শিল্পের জন্য কোনো কর কাঠামো নেই। এ সমস্যাগুলো নিয়ে যদি এফবিসিসিআই সরকারের সঙ্গে দেনদরবার করে, তাহলে আমরা উপকৃত হব। ভ্যাটের ক্ষেত্রেও অনেক শিল্প মুক্ত রয়েছে। আবার অনেকের নির্ধারিত হারে ভ্যাট দিতে হচ্ছে। আমাদের ক্ষেত্রে তা নেই। কিন্তু আমাদের যে সাংবাদিক বন্ধুরা রয়েছেন, তাদের জন্য আমরা ওয়েজবোর্ড ঘোষণা করতে পারছি না।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, দ্য ফাইন্যান্সিয়াল হেরাল্ডের সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদসহ এফবিসিসিআইয়ের কর্মকর্তারা।
Leave a Reply