সর্বশেষ

মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

হিন্দু পরিবারের ওপর হামলা : গ্রেপ্তার হননি সেই ইউপি চেয়ারম্যান ও তার বাহিনী, মারধরের ভিডিও ভাইরাল

হিন্দু পরিবারের ওপর হামলা : গ্রেপ্তার হননি সেই ইউপি চেয়ারম্যান ও তার বাহিনী, মারধরের ভিডিও ভাইরাল

মোহাম্মদ শরিফুল আলম চৌধুরী, কুমিল্লা : কুমিল্লার দেবীদ্বারে ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সংখ্যালঘুর বাড়িতে হামলা ও মারধরের ঘটনায় সেই ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে হামলার শিকার প্রবীর কুমার সাহা বাদী হয়ে অভিযোগটি দায়ের করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের বেগমাবাদ গ্রামের ধীরেন্দ্র সাহার পুত্র প্রবীর সাহার ২ শতাংশ জমি বাড়ির সাথে মিলিয়ে পাকা প্রাচীর নির্মাণ করতে গেলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল আলম নিজেই ওই বাড়িতে যেয়ে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ শ্রমিকদের বাঁধা, নির্মাণ সামগ্রী ভাংচুর, ফেলে দেয়া এবং প্রবীর সাহার উপর হামলা করেন।

ওই ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে হামলার শিকার প্রবীর কুমার সাহা বাদী হয়ে উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল আলম (৩২), উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক সুজিত পোদ্দার ও আপন রায় (৫০) সহ অজ্ঞাত আরো ৩ জনকে আসামী করে ওই অভিযোগ দাখিল করেন।

হামলার শিকার প্রবীর সাহা বলেন, অন্য এলাকা থেকে আসা একটি পরিবারের বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধিকরণে আমার বাড়ির জায়গা জোরপূর্বক দখল করে নেয়ার ষড়যন্ত্রে ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল আলমের নেতৃত্বে এবং সে নিজেই আমার বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও আমাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দই নয়, আমাকে বেধরক মারধর ও লাঞ্ছিত করে। ওই ঘটনার সময় ধারন করা ভিডিও প্রকাশ এবং থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরও তাকে গ্রেফতার পূর্বক আইনের আওতায় আনা হলনা। আমি ও আমার পরিবার এখন জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় আছি।

এ ব্যপারে মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানার সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

তবে দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর প্রবীর সাহার লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

সাঈদীর মৃত্যুতে শোক : এবার কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের ১৬ নেতাকে অব্যাহতি

সাঈদীর মৃত্যুতে শোক : এবার কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের ১৬ নেতাকে অব্যাহতি

মোহাম্মদ শরিফুল আলম চৌধুরী : মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের ১৬ নেতাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মহিউদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম রুবেল স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম রুবেল।

সাইফুল ইসলাম রুবেল বলেন, ‘সাঈদীর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় ওই ১৬ জনের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সিদ্ধান্তে এই ব্যবস্থা নিয়েছি। আগস্ট মাসের কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আগে ব্যবস্থা নিতে পারিনি। আমরা এখনও বিষয়টির ওপর নজর রাখছি। যদি ছাত্রলীগের কাউকে রাজাকারকে নিয়ে পোস্ট দিতে দেখা যায়, তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাজাকারের প্রতি যাদের দরদ আছে, তারা দেশের শত্রু।’

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের নির্দেশে কুমিল্লা উত্তর জেলা শাখার জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে, সংগঠনের শৃঙ্খলা ও নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি কার্যকলাপে জড়িত থাকায় উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রাতুল রহমান আশিক, বাঙ্গরা বাজার থানা ছাত্রলীগ সভাপতি শেখ আবুল কাসেম, দেবীদ্বার উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইদুর রহমান, মুরাদনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মো. মেজবাহ উদ্দিন, মেঘনা উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. টিটু মিয়া, মুরাদনগর উপজেলা ছাত্রলীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক নাজমুল খাঁন, উপ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মো. ইসমাইল, চান্দিনার দোল্লাই নোয়াবপুর সরকারি কলেজ শাখার সহসভাপতি মো. তারেক, মেঘনার লুটেরচর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ যুগ্ম আহ্বায়ক মো. নাঈমুল ইসলাম শান্ত, চান্দিনার গল্লাই ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি আবু নাঈম, মহিচাইল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ফয়েজ উদ্দিন মোল্লা, বাতাঘাসি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি মো. ফাহিম, সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদ রানা, দেবীদ্বারের বড়শালঘর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি মো. ছাদেক হোসেন, গল্লাই ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিফাত তানজির এবং দেবীদ্বারের বরকামতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. এনামুল হককে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

ঘরের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন : দেবীদ্বারে ৬ সন্তানকে নিয়ে অর্ধাহারে তিন কাটে নিলুফার পরিবার

ঘরের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন : দেবীদ্বারে ৬ সন্তানকে নিয়ে অর্ধাহারে তিন কাটে নিলুফার পরিবার

মোহাম্মদ শরিফুল আলম চৌধুরী : ‘আসমীনের দেখতে যদি তোমরা সবে চাও, রহিমদ্দীর ছোট্ট বাড়ী রসুলপুরে যাও’- পল্লীকবি জসীম উদ্দীনের বিখ্যাত এই কবিতা আমরা সবাই পড়েছি। কবিতার মতো আসমানী না হলেও কাছাকাছি একজনের সঙ্গে দেখা হলো কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার সুবিল ইউনিয়নের পশ্চিম পোমকাড়া গ্রামে। নাম নিলুফা আক্তার।

তিনি বলেন, আমাদের থেকে রোহিঙ্গারাও ভালো আছে। আমাদের থাকার জায়গা নেই, খাবারের ব্যবস্থা নেই, অসুস্থ্যতার জন্য কেউ কাজে নেয় না তাই কর্মের সংস্থান নেই, ভিক্ষাবৃত্তিই এক মাত্র সম্বল।

স্বামী-পুত্র-কণ্যাসহ ৮ জনের পরিবার নিয়ে যাযাবরের জীবন যাপন করছি। এখন আমার একটি ঠিকানা প্রয়োজন কথাগুলো বললেন অসহায় গৃহকর্তা মো. মামুন মিয়ার স্ত্রী নিলুফা আক্তার।

রোববার সরেজমিনে যেয়ে দেবীদ্বার উপজেলার সুবিল ইউনিয়নের পোমকাড়া গ্রামের তাজু মুহুরীর পরিত্যাক্ত একটি নির্জন বাড়িতে নিলুফার পরিবারের মানবেতর জীবনযাপনের এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।

নির্জন ঝোপঝারের ভেতরে প্রায় ৩০ বছর আগে একটি দোচালা টিনসেট ও একচালা একটি রান্না ঘর রয়েছে। প্রায় ৩ মাস পূর্বে ভিক্ষা করতে এসে এ বাড়িটির সন্ধান পায়। আশ-পাশে কোন বাড়িঘর নেই, একেবারে একটি ভুতুরে জঙ্গল পোকা- মাকড়, মশা, জোকের উপদ্রপ বেশী থাকলেও এরই মাঝে ৬ শিশু সন্তানসহ এ অস্বাস্থ্যকর বিদ্যুৎবিহীন পরিবেশেই তাদের বসবাস। বাড়ির মালিকের সন্ধ্যা না পেলেও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে এখানেই অস্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন তারা। দোচালা টিনের ঘরটির দরজা জানালা নেই, ঘরের বেড়া ভাঙ্গা। রান্না ঘরের চালা থাকলেও বেড়া নেই। রাতের অন্ধকারে কুপি বাতিই ভরসা, মশা এবং জোকের উপদ্রপ থেকে রক্ষায় একটি মশারি কেনারও সামর্থ্য নেই।

নিলুফার স্বামী মামুন জানায়, তার আদী বাড়ি দেবীদ্বার পৌর এলাকার বারেরা গ্রামের আজি উল্যার বাড়ি। তার পিতা মালেক মিয়াও ভূমিহীন ছিলেন। তিনি উপজেলার ধামতী গ্রামের নিলুফাকে বিয়ে করেন। নিলুফা গার্মেন্টেসে চাকরি করত। সে সুবাদে সেও গার্মেন্টস কর্মী হিসেবে স্ত্রীর সাথে চাকুরি শুরু করেন। লেখাপড়া কম জানায় ভালো বেতন না পেয়ে দেবীদ্বারে চলে আসেন। পৌর এলাকার বানিয়াপাড়া ভাড়া বাসায় থেকে ভ্যান- রিক্সা চালিয়ে জীবীকা নির্বাহ করে আসছিল। একসময় অসুস্থ্য হয়ে পড়লে ভাড়া বাসায় থাকা সম্ভব হয়নি। বারেরারচর গ্রামের গুচ্ছগ্রামে সুফিয়া বেগমের নামে বরাদ্ধকৃত ঘরে থাকা শুরু করেন। ওখানে প্রায় ১০ বছর থাকেন। সুফিয়া চট্রগ্রামে থাকত, এখন সুফিয়া ফিরে তার ঘর বুঝে নেন। মামুন মিয়া ভিক্ষাবৃত্তির সুবাদে পোমকাড়া গ্রামের এ পরিত্যাক্ত বাড়ির সন্ধান পান। তার জাতীয় পরিচয় পত্র থাকলেও সেটি হারিয়ে ফেলে। তার স্ত্রীর জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকায় মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ সরকারের নানা সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। এমনকি ৩ পুত্র ও ৩ কণ্যা শিশুর জন্মনিবন্ধনও করাতে পারেননি। বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয় পত্র এবং ভূমিহীন যাযাবর হওয়ায় সন্তানদের নেই কোন শিক্ষার সুযোগ সুবিধা। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কোন কর্মীর সাথে কখনো তাদের সাক্ষাৎ ঘটেনি। বিবাহের পর ৬ সন্তানের জনক- জননী হয়েছেন তারা। মামুনের তথ্যানুযায়ী তার সন্তানদের নাম ও বয়সের দিক থেকে জানান, বড় ছেলে আরিফ(১০), বড় মেয়ে শারমিন(৮), মেঝো ছেলে সজিব(৬), মেঝো মেয়ে মাহিমা (৫), ছোট মেয়ে মারিয়া (১৫ মাস) এবং ছোট ছেলে আলী বাবা (১৪ দিন)।

স্থানীয় দুলাল মিয়া বলেন, প্রায় ৩ মাসপূর্বে এ পরিত্যাক্ত বাড়িতে আশ্রয় নেন মামুনের পরিবার তখন তার স্ত্রী গর্ভবতী ছিল। এ বাড়ির মালিকের ১১ ছেলে সবাই নামীধামী শিক্ষক, এলাকায় কেউ থাকেন না। বাড়িটি দখলে রাখতে প্রায় ৩০ বছর পূর্বে একটি টিন সেট ঘর ও একটি পাকা ভবন নির্মানাধীন অকস্থায় ফেলে যান। আমরা ছোট বেলায় দিনে এ এলাকায় আসতে ভয় পেতাম। এখনো সেই ঝোপ-ঝার রয়েছে। সাপ, বিচ্ছু, জোঁক, মশা- পোকামাকড়ের মধ্যে ওদের বসবাস। প্রায় দু’সপ্তাহ আগে মামুনের স্ত্রীর ডেলিভারী খরচ ১৪শত টাকা দিয়ে সহায়তা করি।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. গোলাম সারওয়ার মুকুল ভূঁইয়া বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমার জানা ছিলনা। এখন আপনাদের মধ্যে শুনেছি। ইউএনওর সাথে আলোচনা হয়েছে তিনি ঘটনা সম্পর্কে জানতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাচ্ছেন। আশা করি তার আবাসনসহ যাবতীয় সুযোগ সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা হবে।

দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিগার সুলতানা বলেন, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।

বুধবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৩

বৃষ্টি-অসুস্থতা উপেক্ষা করে ১৫ দিন ধরে আন্দোলনে কুমিল্লার ম্যটস শিক্ষার্থীরা

বৃষ্টি-অসুস্থতা উপেক্ষা করে ১৫ দিন ধরে আন্দোলনে কুমিল্লার ম্যটস শিক্ষার্থীরা

মোহাম্মদ শরিফুল আলম চৌধুরী : ইন্টার্নশিপ বহাল, সংগতিপূর্ণ কারিকুলাম প্রণয়ন ও সংশোধনসহ চার দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জন ও ছাত্র ধর্মঘট অব্যাহত রেখেছে কুমিল্লাসহ সারা দেশের মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (৩০ আগস্ট) সকাল থেকে আন্দোলনের ১৫তম দিনে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, ১২ বছর ধরে সরকারিভাবে কোনো নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। প্রতি বছর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাত থেকে ১০ হাজার শিক্ষার্থী পাশ করে বের হলেও তারা চাকরি পাচ্ছেন না।

প্রতিষ্ঠানে তালা দিয়ে ক্লাস বর্জন অব্যাহত রেখেছে শিক্ষার্থীরা।

ইন্টার্নশিপ বহাল রেখে কোর্স কারিকুলাম সংশোধন, অ্যালাইড হেলথ বোর্ড বাতিল করে ‘মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড অব বাংলাদেশ গঠন করতে রংপুরেও চলছে শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন। দাবি মানা না হলে আন্দোলন আরও কঠোর করার ঘোষণা। সারাদেশের মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের অধীনে ৫০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে।

যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ডিপ্লোমা মেডিকেল ফ্যাকাল্টি (ডিএমএফ) গঠন করলেও এক দশক ধরে এই পদে নিয়োগ বন্ধ করে রেখেছে সরকার। বঙ্গবন্ধুর প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ম্যাটস শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার বিষয় উল্লেখ থাকলেও বাস্তবায়ন হয়নি এর কোনোটিই।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, দেশের প্রান্তিক জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ডিপ্লোমা চিকিৎসকের বিকল্প নেই। তাই উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেয়ার দাবি তাদের।

সোমবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৩

দেবীদ্বারে রাতারাতি নতুন ১৬ কবর, রহস্য উদঘাটনে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি

দেবীদ্বারে রাতারাতি নতুন ১৬ কবর, রহস্য উদঘাটনে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি

মোহাম্মদ শরিফুল আলম চৌধুরী : দেবীদ্বারে হঠাৎ নতুন ১৬টি কবরের সন্ধান মিলেছে! বাড়ি ও আশ পাশের লোজন এবং স্থানীয়দের চোখে এ নতুন কবরের দৃশ্য চমকে দিয়েছে। এ কবরগুলো জনমনে নানা সন্দেহ ও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। নতুন এ কবরগুলো দেখতে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক লোকজন ছুটে আসছেন।

কবরবাসী কারা ? কখন কে কে মারা গেলেন ? জানাযা কারা দিলেন ? এ নিয়ে সাধারন মানুষের মধ্যে কৌতুহলের শেষ নেই। এসব প্রশ্নের সঠিক উত্তর কেউ দিতে পারছেন না, এ নিয়ে তৈরী হয়েছে ধুম্রজাল।

স্থানীয় রমিজ মোল্লা নামে এক ব্যক্তি ১৬টি নতুন কবর এবং কবরের ভেতরের মানুষগুলোর পরিচয় নিশ্চিত করাসহ রহস্য উদঘাটনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত আবেদন করেছেন। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে রোববার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমিকে আহবায়ক ও পৌর উপ-সহকারি ভূমি কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন ও উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ারকে সদস্য করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন।

ঘটনাটার সূত্রপাত গত ১৮ আগস্ট কুমিল্লার দেবীদ্বার পৌর সদরের প্রাণকেন্দ্রের নিউমার্কেটস্থ মোল্লা বাড়ির পুকুর পাড়ের গোরস্তানের পাশে।

নিউমার্কেটের প্রবীন ব্যবসায়ি হাজী আব্দুল লতিফ মোল্লা বলেন, আমি প্রায় ৪০ বছরেরও আগে দেবীদ্বার নিউমার্কট মোল্লা বাড়ির পুকুর পাড়ে বাঁশঝারের জমি কিনে মার্কেট তৈরী করে ব্যবসা করে আসছি। আমার মার্কেটের পাশে হঠাৎ এতগুলো নতুন কবর দেখে শঙ্কিত হয়ে পড়ি। কারা মারা গেলেন, কারা কবর দিলেন? জানাযা, মৃত্যুর বিষয়ে প্রচার- প্রচারনার সংবাদও পাইনি।

দেবীদ্বার মোল্লা বাড়ির রমিজ উদ্দিন মোল্লা জানান, আমার পূর্ব পুরুষদের কবরস্থান যৌথ মালিকানাধিন সম্পত্তির উপর নির্দিষ্ট করা রয়েছে। গোরস্তানের পাশে আমার ৮৭২ খতিয়ানে ৪২৪৮ দাগে ১১১ পয়েন্ট অর্থাৎ প্রায় ২ শতাংশ জমি রয়েছে। উক্ত জমি আর এস, সিএস-এ পুকুরপাড় উল্লেখ রয়েছে। এ জমির উপড়ে থাকা বাঁশঝারটি প্রায় ৫০ বছর পূর্বে কেটে পরিস্কার করে রেখেছি। তাছাড়া পূর্বে এখানে কোন কবর ছিলনা। এরই মধ্যে কে বা কারা আমার জমির উপরের সীমানা প্রাচির ভেঙ্গে ওই জমিতে সারিবদ্ধ ভাবে ১৬টি নতুন কবর তৈরী করে রেখেছে। আমার ৬৫ বছর বয়সে গোরস্তানের বাহিরে আমার জমিতে কাউকে কবর দিতে দেখি নাই, বাড়ির মুরুব্বীরাও দেখেননি, তাই বিচলিত হয়ে পড়ি। নতুন কবর এবং কবরের ভেতরের মানুষগুলোর পরিচয় নিশ্চিত করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত আবেদন করেছি।

এ ব্যপারে মোল্লা বাড়ির নজরুল ইসলাম মোল্লা জানান ভিন্ন কথা, বিএস খতিয়ানভূক্ত ১৮ শতাংশ জমির উপর এ গোরস্তান দু’শত বছরের পুরনো। এখানে নতুন কোন কবর নেই, আমার পৈর দাদা-দাদী, বড় বাবা-বড়’মা, চাচা-চাচী, জেঠা-জেঠিসহ স্বজন ও বাড়ির লোকজনের কবর রয়েছে। আমরা পূর্বপুরুষ ও নারীদের কবরগুলো মাটি দিয়ে উঁচু করে রেখেছি মাত্র। 

এ ব্যাপারে দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ কমল কৃষ্ণ ধর জানান, আজ সোমবার (২৮ আগস্ট) বেলা ২টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এসেছি। অভিজ্ঞতা হল দেবীদ্বারের কেউ কবরের জায়গা বিক্রি করতে প্রস্তুত, আবার কেউ খালি জায়গায় গায়েবি কবর সৃজন করায় দক্ষতা দেখাচ্ছেন।

এ কবরের রহস্য উদঘাটনে ইউএনও মহোদয় তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন পেলেই সত্যটা প্রকাশ হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা বলেন, বিষয়টা স্পর্শকাতর তাই এসিল্যান্ডকে আহবায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছি। তাদেরকে  তদন্ত স্বাপেক্ষে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছি। রিপোর্ট পেলেই কবরের রহস্য মানে সঠিক কবর নাকি গায়েবি কবর তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।

রবিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৩

দেবীদ্বারে মোটর সাইকেল কিনে না দেয়ায় স্কুল ছাত্র ও অসুস্থতা সহ্য করতে না পেরে গৃহবধূর আত্মহত্যা

দেবীদ্বারে মোটর সাইকেল কিনে না দেয়ায় স্কুল ছাত্র ও অসুস্থতা সহ্য করতে না পেরে গৃহবধূর আত্মহত্যা

মোহাম্মদ শরিফুল আলম চৌধুরী : কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ ইউনিয়নের এলাহাবাদ গ্রামে মোটরসাইকেল কিনে না দেওয়াতে মা বাবারর সঙ্গে অভিমানে সালমান(১৬) নামে ১০ম শ্রেনীর এক শিক্ষার্থী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সে এলাহাবাদ গ্রামের মো. কুদ্দুস মিয়ার ছেলে এবং এলাহাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানা যায়, সালমান বেশ কিছু দিন ধরে মোটরসাইকেল কিনে দেওয়ার জন্য পরিবারে চাপ সৃষ্টি করে আসছিল। কিছুদিন পর কিনে দিবে এমন আশ্বাস দেওয়ার পরও ২৬ আগস্ট শনিবার দিবাগত রাতে সে আত্মহত্যা করে।

খবর পেয়ে দেবীদ্বার থানার এসআই কৃষ্ণ মোহন ঘটনাস্থলে নিয়ে লাশ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা স্থানান্তর করেন। এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।

অপর দিকে উপজেলার  জাফরগঞ্জ ইউনিয়ন এর বাজেবাখর গ্রামের ভূঁইয়া বাড়ির মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী ঝরনা বেগম(৩৭)  বিষাক্ত কেরির বড়ি খেয়ে আত্মহত্যা করেন।

স্হানীয়রা জানান, শারিরীক দুরারোগ্য ব্যাধি অসুস্থতা সহ্য না করতে পেরে ২৬ একই রাতে নিজ বাড়িতে তিনি আত্মহত্যা করেন। খবর পেয়ে দেবীদ্বার থানার এসআই মোবারক হোসেন লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত জন্য কুমিল্লা প্রেরণ করেন।

এ বিষয় রোববার সন্ধ্যায় দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, আত্মহত্যার ঘটনায় পৃথক দুটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে তাদের স্বজনদের নিকট লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।

শনিবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৩

খন্দকার মোশতাক ও কর্নেল রশিদ কুমিল্লার অভিশাপ

খন্দকার মোশতাক ও কর্নেল রশিদ কুমিল্লার অভিশাপ

মোহাম্মদ শরিফুল আলম চৌধুরী : ভয়াল ১৫ আগস্ট। ১৯৭৫ সালের এ দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপরিবারে বর্বরোচিত ও কলঙ্কিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়েছিলেন। নির্মম এ হত্যাযজ্ঞ পরিকল্পনাকারীদের অন্যতম ছিলেন কুমিল্লার খন্দকার মোশতাক আহমদ। আর কিলিং মিশনে অংশ নেয়াদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তারই ঘনিষ্ঠ সহচর মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ও বিদেশে পলাতক কর্নেল (বরখাস্ত) খন্দকার আবদুর রশিদ।

খন্দকার মোশতাকের বাড়ি জেলার দাউদকান্দি উপজেলার দশপাড়ায় এবং কর্নেল রশিদের বাড়ি চান্দিনা উপজেলার ছয়গড়িয়া গ্রামে। ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা দায়ের করার আগে মারা গিয়ে খন্দকার মোশতাক বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার দায় থেকে রেহাই পেলেও ফাঁসির দণ্ড মাথায় নিয়ে বর্তমানেও বিদেশে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ফ্রিডম পার্টির প্রতিষ্ঠাতা খন্দকার রশিদ।

অভিশপ্ত ১৫ আগস্ট শোকের মাস এলেই আলোচনায় উঠে আসে কুমিল্লার মানুষের কাছে ধিকৃত এই দু’জনের নাম। রশিদকে অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে এনে মামলার রায় কার্যকর করার দাবি এখন কুমিল্লার সচেতন রাজনৈতিক মহলের।

খন্দকার মোশতাক আহমদ বঙ্গবন্ধুর অতিভক্ত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পররাষ্ট্র, আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর তোষামোদী করে বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভায় বিদ্যুৎ, সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রীর পদটিও বাগিয়ে নেন। তিনি ছিলেন, বাকশালের তৃতীয় শীর্ষ নেতা। আওয়ামী লীগের ভেতর মোশতাক ডানপন্থী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সব সময় মাথায় থাকত জিন্নাহ-ক্যাপ, হাতে ধূমপানের পাইপ। অতিবিনয়ী ভদ্রতার মুখোশপরা মুখচোরা হাসিতে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলতেন। ১৫ আগস্টের পরিকল্পনাকারীদের অন্যতম ছিলেন তিনি।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ঘাতক রশীদের চাচা মুশাররফ হুসাইন ছিলেন মোশতাকের বন্ধু। চাচার মাধ্যমেই মোশতাকের সঙ্গে দেখা করার ব্যবস্থা করেন রশীদ। ১৯৭৫ সালের ২ আগস্ট পুরান ঢাকার আগামাসি লেনে সাদা পোশাকে খন্দকার মোশতাকের বাসায় যান রশীদ। সেসময় তারা দেশের রাজনীতি নিয়ে কথা বলেন এবং বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হলে পরিস্থিতি কেমন হবে সেটা জানতে চান রশীদ। মোশতাক তখন উত্তর দেন, ‘দেশের জন্য সেটা ভালো হবে।’

বঙ্গবন্ধুর পরে ক্ষমতায় কে বসবে এ প্রশ্ন করেছিলেন মোশতাক আহমেদ। উত্তরে রশীদ বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় কেউ যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবে।’ এতে মোশতাক বুঝে নিয়েছিলেন যে তাকেই ক্ষমতায় বসাতে চাচ্ছে রশীদরা। সেই সঙ্গে মোশতাক বঙ্গবন্ধুকে খুনের ষড়যন্ত্র সম্পর্কেও স্পষ্ট বার্তা পেয়েছিলেন হত্যাকাণ্ডের ১৩ দিন আগেই। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে তিনি সতর্ক করেননি বা রশীদ-ফারুকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি।

এ থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান যে, মোশতাক ছিলেন একজন ষড়যন্ত্রকারী। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ক্ষমতার মোহে অন্ধ খন্দকার মোশতাক মীর জাফরী কায়দায় রাষ্ট্রপতির পদে ক্ষমতায় মাত্র ৮৩ দিন অবস্থান করতে পারলেও পরে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের চালে ক্ষমতাচ্যুত হতে বাধ্য হন। আশ্রয় নেন পুরান ঢাকার আগামাসি লেনের বাড়িতে। চারতলার বাড়িটির তিনতলার সুরক্ষিত একটি কক্ষে বাস করতেন। ক্ষমতায় বসে ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে খন্দকার মোশতাক সরকার ইমডেমনিটি (দায়মুক্তি) অধ্যাদেশ জারি করেছিলেন।

তিনি ‘জয় বাংলা’ স্লোগান পরিবর্তন করে এর স্থলে ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ স্লোগান চালু করেন। এই সময় তিনি ‘বাংলাদেশ বেতার’র নাম পরিবর্তন করে ‘রেডিও বাংলাদেশ’ করেন।

তার শাসনামলেই চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমেদ, ক্যাপ্টেন মো. মনসুর আলী ও এএইচএম কামরুজ্জামানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে (ওই বছরের ৩ নভেম্বর) হত্যা করা হয়।

মোশতাক আহমেদ ১৯৭৫ সালের ৫ নভেম্বর সেনাবিদ্রোহের দ্বারা অপসারিত হন। ১৯৭৬ সালে মোশতাক আহমেদ ডেমোক্রেটিক লীগ নামক এক নতুন দল প্রতিষ্ঠা করেন। একই বছর সামরিক শাসককে অপসারণের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ২টি দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয় এবং আদালত তাকে ৫ বছরের শাস্তি প্রদান করেন।

জেল থেকে মুক্তিলাভের পর তিনি আবার সক্রিয় রাজনীতি শুরু করেন। হত্যাকাণ্ডের ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালের ২ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রিসিপশনিস্ট কাম রেসিডেন্ট পিএ আ.ফ.ম. মুহিতুল ইসলাম ধানমন্ডি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। কিন্তু এর আগেই ওই বছরের ৫ মার্চ মোশতাক মৃত্যুবরণ করেন। ফলে হত্যার দায় থেকে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান তিনি।

পের জনগণের ক্ষোভ আর ঘৃণার মুখে পুলিশ প্রহরায় দাউদকান্দির দশপাড়ায় তাকে দাফন করা হয়। বর্তমানে সীমানা প্রাচীরে ঘেরা তার বাড়িতে দোতলা একটি ভবন রয়েছে। এছাড়াও একটি মসজিদ ও পারিবারিক কবরস্থানও রয়েছে। অন্য কবরে নামফলক থাকলেও মোশতাকের কবরে তা নেই। প্রথমে থাকলেও পরে তা সরিয়ে ফেলা হয়।

মোশতাকের একমাত্র ছেলে খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ যুক্তরাষ্ট্রে, মেয়ে খন্দকার শিরিন সুলতানা ও ডা. খন্দকার নাজনীন সুলতানা লন্ডনে থাকেন।

তার বাড়িটির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে সেখানে জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান স্থাপনের দাবি স্থানীয়দের। এরই মধ্যে এলাকায় থাকা কলেজ, মাদরাসা ও ঈদগা থেকে মোশতাক ও তার বাবা মাওলানা কবির উদ্দিনের নাম মুছে ফেলেছে এলাকাবাসী। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্তৃক একাধিকবার তার বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচি দেয়া হয়।

সর্বশেষ গত বছরের ১৮ ফ্রেব্রুয়ারি দাউদকান্দি উপজেলা চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ উপজেলার দশপাড়া থেকে মোশতাকের বাড়ি অপসারণের জন্য বিক্ষোভ সমাবেশসহ বাড়ি ঘেরাও করার চেষ্টা চালায়। মোশতাকের একমাত্র ছেলে খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ আগে মাঝে মধ্যে পরিবারের সদস্যদের কবর জিয়ারত করতে বাড়ি এলেও গত ৫-৬ বছর যাবৎ জনরোষের ভয়ে বাড়িতে আসেন না। পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে আলোচিত বাড়িটি।

এদিকে খন্দকার আবদুর রশিদ ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি মধ্যরাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় পাঁচ আসামির ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর থেকে এখনও আলোচনার শীর্ষে রয়েছে কর্নেল খন্দকার আবদুর রশিদ।

চান্দিনায় অনুসন্ধানে জানা যায়, বহুল আলোচিত ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ক্যাডার বাহিনী নিয়ে অনেকটা কেন্দ্র দখল করেই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন খন্দকার আবদুর রশিদ। ওই বিতর্কিত নির্বাচনের সময় বিভিন্ন পথসভায় হাসতে হাসতেই তিনি বঙ্গবন্ধুকে খুনের কথা স্বীকার করতেন। ভোটের দিন উপজেলার ৫১টি কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণে রাখতে গঠন করা হয় বিশেষ ক্যাডার বাহিনী। ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি নামে মাত্র থাকলেও রশিদের ‘তার’ মার্কায় প্রকাশ্যেই সিল মারে তার ক্যাডাররা। তখন প্রশাসন ছিল নীরব দর্শক মাত্র। ফলাফলে ৬০ হাজার ৯৩৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন রশিদ। নির্বাচনে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য, বর্তমানে এলডিপি মহাসচিব অ্যাডভোকেট রেদোয়ান আহমেদ পান মাত্র তিন হাজার ৩৪১ ভোট। অপরদিকে আবদুল কাদের জিলানী ৪৮৩ ও সহিদ উল্লাাহ সরকার ৪৯৪ ভোট পান।

কর্নেল রশিদের গ্রামের বাড়ি চান্দিনার ছয়গড়িয়ায়। বর্তমানে নিকটাত্বীয়ের সঙ্গে ওই পরিবারের গোপনে কিছু যোগাযোগ থাকলেও এলাকার কেউই এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। খন্দকার রশিদ বিদেশে কোথায় পলাতক রয়েছেন সেটা চান্দিনায় গিয়েও জানা সম্ভব হয়নি।

১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে অবস্থা বেগতিক দেখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান রশিদ। তবে মেয়ে মেহনাজের সঙ্গে তার সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে বলে স্থানীয়রা দাবি করেছেন।

গ্রামবাসী জানান, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের সময় কর্নেল রশিদ জমির বিনিময়ে এবং লিবিয়া পাঠানোর নামে লোকজনের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা লোপাট করে নির্বাচনের দিন রাতেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। বিতর্কিত ওই নির্বাচন বাতিল হওয়ার পর ১২ জুনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অধ্যাপক আলী আশরাফ বিজয়ী হন।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনের সময় রশিদের মেয়ে মেহনাজ এলাকায় এলে স্থানীয় প্রতারিত লোকজনের তোপের মুখে পড়েন। সেসময় মোবাইল ফোনে মেহনাজ অজ্ঞাত স্থানে অবস্থানরত কর্নেল রশিদের সঙ্গে প্রতারিত লোকদের আলাপ করিয়ে দিয়ে নির্বাচনের পর টাকা ফেরত দেয়ার আশ্বাস দেন।

বাবার নির্দেশে সেই নির্বাচনে হাতি মার্কা নিয়ে মেহনাজ নির্বাচন করে ১৩৫ ভোট পেয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনের পর একই গ্রামের রুকু মিয়া ভূঁইয়া নামের এক ব্যক্তির ১৬ লাখ টাকা টাকা ফেরত না দেয়ায় ২০০৯ সালের ২৮ এপ্রিল মেহনাজ গ্রামের বাড়িতে এসে লাঞ্ছিত হন।

স্থানীয়রা জানান, রশিদের বাবা অবসরপ্রাপ্ত পোস্ট মাস্টার করিম খন্দকার ব্যক্তিগতভাবে সজ্জন লোক ছিলেন। কিন্তু স্বপরিবারে শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার কারণে তিনি আমৃত্য ছেলের (রশিদ) সঙ্গে কথা বলেননি। তার অর্থও গ্রহণ করেননি।

১৯৯৪ সালে তিনি মারা যাওয়ার আগে তার নামাজে জানাজায় যেন রেন্টু (রশিদের ডাক নাম) উপস্থিত না থাকে, মরদেহ স্পর্শ না করতে পারে সেই অছিয়ত করে যান। তাই বাবার মৃত্যুর পর তার জানাজায় রশিদকে অংশ নিতে দেয়নি আত্মীয় স্বজনরা।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের অন্যতম খলনায়ক ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যার দায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি কর্নেল (অব.) আব্দুর রশিদের চান্দিনার সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে সরকার। ২০১৫ সালের ১৪ জুন সরকারের পক্ষে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. হাসানুজ্জামান কল্লোলের নির্দেশে উপজেলা প্রশাসন সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বাড়িসহ ৬.১২ একর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ৬টি সাইনবোর্ড সাঁটানো হয়।

এর আগে ১৯৯৬ সালের ১৯ ডিসেম্বর একই ভাবে আদালতের নির্দেশে খুনি রশিদের আরও ১০.৮২ একর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়। এর ফলে রশিদ ও তার পরিবারের প্রায় ১৭ একর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে সরকার। বিদেশে পলাতক ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ঘাতক কর্নেল রশিদ প্রসঙ্গে কুমিল্লার প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ আফজল খান জানান, মোশতাক-রশিদদের কারণে কুমিল্লাকে ইতিহাসের পাতায় কলঙ্কিত করা হয়েছে। তাই ঘাতক রশিদকে দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করতে পারলেই হয়তো আমরা দায়মুক্তি পাব।

কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকার জানান, স্বপরিবারে জাতীর জনকের ঘাতক খন্দকার রশিদসহ বিদেশে পলাতক অন্যান্য ঘাতকদের দেশে ফিরিয়ে এনে তার ফাসির রায় কার্যকর করতে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ঘাতক রশিদকে দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করতে না পারলে ইতিহাসের কালো অধ্যায়ে কুমিল্লার নাম থেকেই যাবে।

শুক্রবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৩

বঙ্গবন্ধু হত্যায় সেদিন স্তম্ভিত হয়েছিল বিশ্ব : উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ

বঙ্গবন্ধু হত্যায় সেদিন স্তম্ভিত হয়েছিল বিশ্ব : উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ

মোহাম্মদ শরিফুল আলম চৌধুরী : বঙ্গবন্ধুর মতো নেতা শুধু বাংলায় কেনো এই গোটা পৃথিবীতে খুব বেশি নেই যিনি একটা জাতিকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েই ক্ষ্রান্ত থাকেননি, দিনের পর দিন লড়াই সংগ্রাম করে গেছেন স্বাধীনতার জন্য এবং সত্যি তিনি সেই দেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত টানা ২৪ বছরের সেই সংগ্রাম যেন এক মহাকাব্য। আমরা বড়ই অভাগা জাতি এমন বিশ্বনেতাকে স্বাধীনতার মাত্র চার বছরের মাথায় সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল এই স্বাধীন দেশে।

শুক্রবার (২৫আগষ্ট) সকালে রাজামেহার ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে ১৫ই আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৪৮তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারসহ সকল শহীদের স্মরণে দোয়া ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ এসব কথা বলেন।

রাজামেজার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী আলমগীর হোসেন সরকারের সভাপতিত্বে এবং রাজামেহার ইউপি চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন সরকার'র সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য মো. আলমগীর কবির,  দেবীদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি লুৎফর রহমান বাবুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সুলতানপুর ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মো. হুমায়ুন কবির, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বরকামতা ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম, গুনাইঘর উওর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোকবল হোসেন মুকুল, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম রুবেল, উপজেলা মৎসজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন টিটু, রাজামেহের ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম আজাদ, ব্যাংকার আব্দুল বারী সরকার, উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক আসাদুর রহমান রনিসহ ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বৃহস্পতিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৩

শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানাতে তার কাছে হেঁটে গেলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি

শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানাতে তার কাছে হেঁটে গেলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি

বিশেষ প্রতিবেদক : নৈশভোজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানাতে তার কাছে হেঁটে যান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ব্রিকসের বর্তমান চেয়ার এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা এ নৈশভোজের আয়োজন করেন। খবর বাসসের।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কর্মব্যস্ততা সম্পর্কে সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে কয়েক গজ দূরে থাকা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শেখ হাসিনার কাছে হেঁটে গিয়ে কুশল বিনিময় করেন এবং তারা কিছুক্ষণ পরস্পরের খোঁজ খবর নেন।’

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট বুধবার রাতে জোহানেসবার্গের গ্যালাঘের এস্টেট, মিড্রান্ডে তার আমন্ত্রণে ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে জোহানেসবার্গে আসা রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সম্মানে এই নৈশভোজের আয়োজন করেন।

নৈশভোজে শেখ হাসিনা চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসাসহ অন্যান্য কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানগণের সাথে কুশল বিনিময় করেন।

মোমেন বলেন, ‘খুবই সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে কুশল বিনিময় হয়েছে।’

বুধবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৩

মুরাদনগরে ছাত্রদলের নতুন কমিটি : আহবায়কসহ ৫জন বিবাহিত, অছাত্র-ছাত্রলীগ কর্মী!

মুরাদনগরে ছাত্রদলের নতুন কমিটি : আহবায়কসহ ৫জন বিবাহিত, অছাত্র-ছাত্রলীগ কর্মী!

মির্জা সাগর :  ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী, বিবাহিত ও অছাত্রদের দিয়ে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা ছাত্রদলের ২৩ সদস্যের আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সদ্য ঘোষিত এই আহবায়ক কমিটিকে নিয়ে ছাত্রদলের স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

গত ১৯ আগস্ট রাতে কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ আহবায়ক আসিফ কবির ও সদস্য সচিব মাহমুদুল হাসান তামিম মুরাদনগর উপজেলা এবং তিনটি কলেজ শাখার আহবায়ক কমিটির অনুমোদন দিয়েছে। জেলার জ্যেষ্ঠ আহবায়ক ও সদস্য সচিব স্বাক্ষরিত ২৩ সদস্যের শুধু মুরাদনগর উপজেলা কমিটিতেই অভিযোগ রয়েছে অছাত্র, বিবাহিত, চাকরিজীবী এবং ও ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাদের দিয়ে এ কমিটি করা হয়েছে।

ছাত্রদলের একাধিক নেতাকর্মী সোসাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করে জনান, উপজেলা কমিটির আহবায়ক খাইরুল হাসান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নাজিম উদ্দিন, মো. মাহাবুব আলম, মো. সোহেল সিকদার ও সদস্য আবদুল হাই বিবাহিত। এদের মধ্যে মাহাবুব আলম দুই সন্তান ও সোহেল সিকদার এক সন্তানের জনক।

এ ছাড়া যুগ্ম আহবায়ক আশিকুজ্জামান সাগর, ফাহাদ হোসেন, জাহিদ হোসেন স¤্রাট ও আবুল কাশেমসহ সদস্য পদে রহমত উল্লাহ ও রাফি ছাত্রলীগের কর্মী এবং আবু হানিফের কোন ছাত্রত্ব না থাকার পরও পেয়েছেন সদস্য পদ।

উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতা মো. এনামুল হক তার ফেসবুক একাউন্টে লিখেন, ‘পদত্যাগ করলাম যে দলে কোন সাংগঠনিক কাজ চলেনা এবং সম্মান দেয়না এমন রাজনীতি করলামনা (বিএনপি)। মো. সাগর মিয়া নামে আরেক ছাত্রদল নেতা বলেন, ‘যারা জয় বাংলা স্লোগান দেয় তাদেরকেই মুরাদনগর উপজেলা ছাত্রদলের কমিটিতে পদ দেয়া হয়েছে। স্যালুট লিডার এমন একটি কমিটি আমাদেরকে উপহার দেয়ার জন্য।’

জেলা ছাত্রদলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক এক নেতা বলেন, ‘ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র মতে ২৯ বছরের কম বয়সী ছাত্র, অবিবাহিতরাই পাবে ছাত্রদলের পদ। চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীদের জন্য তো অন্যান্য সহযোগী সংগঠন রয়েছে। উপজেলা ছাত্রদলের কমিটি দেখে মনে হয়েছে, দলীয় আদর্শেও চেয়ে ভাইয়ার দলকে এখানে গুরুত্ব বেশি দেওয়া হয়েছে।’

সমালোচনার বিষয়ে বুধবার দুপুরে কথা বলতে কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক আসিফ কবির ও সদস্য সচিব মাহমুদুল হাসান তামিমের মুঠোফোনে একাদিক বার কল করেও তাদের পাওয়া যায়নি।